ঢাকা ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নরসিংদীতে শুভ হত্যার ১৭দিনপর হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ জড়িত ৩ জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি
নরসিংদীতে নিখোঁজের একদিন পর শুভ মিয়া (২০) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের ১৭ দিন পর হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। মাদক সংগ্রহ সংক্রান্ত বিষয়ে তর্কাতর্কির সময় মাদকসেবী বন্ধুদের হাতে শুভ মিয়া খুন হয় বলে স্বীকার করেছে গ্রেপ্তারকৃতরা। রোববার (২৫ মে) দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদীর পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) এস.এম. মোস্তাইন হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-নরসিংদী সদর থানার শেখেরচর মোল্লাপাড়ার মোঃ জাকির হোসেনের ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান (২৪), মাধবদী থানার কুড়েরপাড় এলাকার মোঃ দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ কবির হোসেন (২১), পলাশ থানার কুমারটেক এলাকার মোঃ জালালের ছেলে আহম্মাদ নাঈম (২৪)।
পিবিআই এর নরসিংদীর পুলিশ সুপার এস.এম. মোস্তাইন হোসেন জানান, নরসিংদী সদর থানার শেখেরচর মোল্লাপাড়ার মানিক মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (২০) গত ৬ মে সন্ধ্যার আগে বাড়ি হতে বের হয়। এরপর হতে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে পরদিন ৭ মে বাড়ি হতে ২ কিলোমিটার দূরের একটি ডোবার পাড়ে শুভ’র মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শুভ মিয়ার বড় ভাই মোঃ সাহেদ মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
পরে থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই এর ক্রাইমসিন টিম হত্যার ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০ মে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুর ও চাঁদপুরের মতলব এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় গ্রেপ্তারকৃত আসামী মোঃ হাবিবুর রহমান (২৪) এর নিকট হতে ভিকটিম শুভ মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, শুভ মিয়া ও গ্রেপ্তারকৃতরা পরস্পর বন্ধু। প্রায় সময় তারা বিভিন্ন স্থানে আড্ডা দিতো এবং মাদক সেবন করতো। গত ০৫ মে রাতে শুভ মিয়াসহ মোঃ হাবিবুর, কবির, নাঈম ও অন্য একজন বন্ধু একত্রে শুভর বাড়ির পাশে মাদক সেবন করে। পরের দিন ০৬ মে সন্ধ্যায় শুভ মিয়া হাবিবকে মেসেঞ্জারে কল করে তার অবস্থান জানতে চায়। তখন হাবিবসহ অন্যান্যরা খিদিরপুর টেকপাড়া জানের মুখ ব্রীজের উত্তর পাশে আছে বলে জানায়। প্রায় আধা ঘন্টা পর শুভও সেখানে যায়। এসময় শুভ সহ আরও ৪ জন বন্ধু একত্রে মাদক সেবন করে। মাদক সেবনকালে মাদক সংগ্রহ সংক্রান্ত বিষয়ে শুভর সাথে হাবিবের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে আসামী হাবিবুর ভিকটিম শুভর গলাচেপে ধরে কিল, ঘুষি মারতে থাকে। একই সাথে কবির, নাঈম ও অন্য একজন বন্ধু শুভ’র নাকে মুখে এলোপাথারীভাবে কিল, ঘুষি মারতে থাকে।
এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা গরু বাঁধার একটি দড়ি (রশি) পেয়ে শুভর গলায় প্যাঁচ দিয়ে দুই দিক থেকে দড়ি টেনে ধরে তারা। এতে শুভ মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে মরদেহ রাস্তার পাশের ডোবায় ফেলে দেয় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দড়ি (রশি) খালের পানিতে ছুড়ে মারে। হত্যার পর জড়িতরা অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারের পর তারা বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।এ ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামী গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পিবিআই।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
আপডেট সময় ০৭:০৩:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
৬৮ বার পড়া হয়েছে

নরসিংদীতে শুভ হত্যার ১৭দিনপর হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ জড়িত ৩ জন গ্রেপ্তার

আপডেট সময় ০৭:০৩:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
নরসিংদীতে নিখোঁজের একদিন পর শুভ মিয়া (২০) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের ১৭ দিন পর হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। মাদক সংগ্রহ সংক্রান্ত বিষয়ে তর্কাতর্কির সময় মাদকসেবী বন্ধুদের হাতে শুভ মিয়া খুন হয় বলে স্বীকার করেছে গ্রেপ্তারকৃতরা। রোববার (২৫ মে) দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদীর পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) এস.এম. মোস্তাইন হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-নরসিংদী সদর থানার শেখেরচর মোল্লাপাড়ার মোঃ জাকির হোসেনের ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান (২৪), মাধবদী থানার কুড়েরপাড় এলাকার মোঃ দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ কবির হোসেন (২১), পলাশ থানার কুমারটেক এলাকার মোঃ জালালের ছেলে আহম্মাদ নাঈম (২৪)।
পিবিআই এর নরসিংদীর পুলিশ সুপার এস.এম. মোস্তাইন হোসেন জানান, নরসিংদী সদর থানার শেখেরচর মোল্লাপাড়ার মানিক মিয়ার ছেলে শুভ মিয়া (২০) গত ৬ মে সন্ধ্যার আগে বাড়ি হতে বের হয়। এরপর হতে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে পরদিন ৭ মে বাড়ি হতে ২ কিলোমিটার দূরের একটি ডোবার পাড়ে শুভ’র মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শুভ মিয়ার বড় ভাই মোঃ সাহেদ মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
পরে থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই এর ক্রাইমসিন টিম হত্যার ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০ মে নারায়নগঞ্জের কাঁচপুর ও চাঁদপুরের মতলব এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় গ্রেপ্তারকৃত আসামী মোঃ হাবিবুর রহমান (২৪) এর নিকট হতে ভিকটিম শুভ মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, শুভ মিয়া ও গ্রেপ্তারকৃতরা পরস্পর বন্ধু। প্রায় সময় তারা বিভিন্ন স্থানে আড্ডা দিতো এবং মাদক সেবন করতো। গত ০৫ মে রাতে শুভ মিয়াসহ মোঃ হাবিবুর, কবির, নাঈম ও অন্য একজন বন্ধু একত্রে শুভর বাড়ির পাশে মাদক সেবন করে। পরের দিন ০৬ মে সন্ধ্যায় শুভ মিয়া হাবিবকে মেসেঞ্জারে কল করে তার অবস্থান জানতে চায়। তখন হাবিবসহ অন্যান্যরা খিদিরপুর টেকপাড়া জানের মুখ ব্রীজের উত্তর পাশে আছে বলে জানায়। প্রায় আধা ঘন্টা পর শুভও সেখানে যায়। এসময় শুভ সহ আরও ৪ জন বন্ধু একত্রে মাদক সেবন করে। মাদক সেবনকালে মাদক সংগ্রহ সংক্রান্ত বিষয়ে শুভর সাথে হাবিবের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে আসামী হাবিবুর ভিকটিম শুভর গলাচেপে ধরে কিল, ঘুষি মারতে থাকে। একই সাথে কবির, নাঈম ও অন্য একজন বন্ধু শুভ’র নাকে মুখে এলোপাথারীভাবে কিল, ঘুষি মারতে থাকে।
এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা গরু বাঁধার একটি দড়ি (রশি) পেয়ে শুভর গলায় প্যাঁচ দিয়ে দুই দিক থেকে দড়ি টেনে ধরে তারা। এতে শুভ মিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে মরদেহ রাস্তার পাশের ডোবায় ফেলে দেয় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দড়ি (রশি) খালের পানিতে ছুড়ে মারে। হত্যার পর জড়িতরা অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারের পর তারা বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।এ ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামী গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পিবিআই।