দীর্ঘ চার বছর পর শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। তবে কমিটি ঘোষণার পরপরই তা ঘিরে শরীয়তপুরে শুরু হয়েছে তীব্র বিরোধিতা। কমিটির একটি অংশ বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। এতে সাময়িকভাবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার (৩ জুন) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত চিঠিতে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সাবেক ছাত্রদল নেতা ও আইনজীবী এইচ. এম. জাকিরকে আহ্বায়ক এবং শরীয়তপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল তালুকদারকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটিতে ১৬ জন যুগ্ম আহ্বায়ক ও ১৭ জন সদস্যসহ মোট ৩৫ জন স্থান পেয়েছেন।
শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, জেলা ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয় ২০২১ সালে।
সেই থেকে জেলায় দীর্ঘ ৪ বছর ধরে ছাত্রদলের কমিটি ছিল না। এরপর মঙ্গলবার কমিটি ঘোষণার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দুপুর ২ টার দিকে ছাত্রদলের একটি অংশ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল বের করে এবং মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়কের কোর্ট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। বিক্ষোভকারীদের হাতে লাঠি, ঝাড়ু ও জুতা দেখা যায়। নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে চলা ওই কর্মসূচির কারণে প্রায় ২০ মিনিট যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে পালং মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সড়িয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নবঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পান্থ তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, যারা দীর্ঘদিন মামলা-হামলার মধ্যে থেকেও ছাত্রদলের জন্য কাজ করেছে, তাদের মতামত উপেক্ষা করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। একজন বিবাহিত, চাকরিজীবী ও বয়স্ক ব্যক্তিকে আহ্বায়ক করার চেয়ে প্রহসন আর কিছু হতে পারে না।
নতুন কমিটির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইসাহাক সরদার বলেন, কমিটিতে অনেকেই এখন ছাত্রই নন। যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে, তার পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এমন বিতর্কিত ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে, নতুবা আমরা আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যাব।
শরীয়তপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বাবু মাদবরও বিক্ষোভে অংশ নিয়ে একই ধরনের অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে নবনিযুক্ত আহ্বায়ক এইচ. এম. জাকির কালের কণ্ঠকে বলেন, দীর্ঘ চার বছর ধরে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের কোনো কমিটি ছিল না। সংগঠনের অচলাবস্থা কাটিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিট কমিটি গঠন এবং সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করাই আমাদের মূল দায়িত্ব। নতুন কমিটি ঘোষণার পর কেউ কেউ কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি।
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ছাত্রদলের একটি অংশ বিক্ষোভের সময় সড়কের ওপর বসে পড়ে অবরোধ করেছিল। আমরা দ্রুত তাদের সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেছি।